স্মার্ট কারচুপির অভিযোগ তুলে ইসলামী আন্দোলনের ফল বর্জন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্মার্ট কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল আউয়াল। আজ সোমবার রাত আটটার দিকে খুলনা নগরের পাওয়ার হাউস মোড় এলাকায় দলের নগর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।
খুলনার নির্বাচনে নানা অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়াল বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো আমাদের ভোটার হাতপাখায় চাপ দিলে নৌকা ভেসে উঠেছে। আমরা মনে করি, মেশিনটাকে ওইভাবে সাজানো হয়েছে। কতটা হাতপাখায় আসবে, কতটা নৌকায় যাবে, তা সাজানো ছিল।’
ইভিএম নিয়ে অভিযোগ তুলে আবদুল আউয়াল বলেন, ‘খালিশপুরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে স্যাটেলাইট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমাদের ভোটার হাতপাখা প্রতীকে চাপ দিলে নৌকা ভেসে ওঠে। আমরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন। ওই ভোটারকে বেলা সাড়ে তিনটার পর গিয়ে ভোট দিতে বলেছেন। একজন ভোটার একবার ভোট দিয়ে আবার কীভাবে ভোট দিতে পারেন, তা বোধগম্য নয়।’
আবদুল আউয়াল বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো আরেকটা নির্বাচন হয়েছে। আমরা মনে করছিলাম, সরকার সুন্দর একটা নির্বাচন হবে। তবে খুলনা-বরিশালে যা হয়েছে, তা ন্যক্কারজনক। আমরা ধারণা করতে পারিনি যে এক মার্কায় দিলে আরেক মার্কায় চলে যাবে। এটা আগে শুনতাম। কিন্তু বাস্তবে যে এ রকম তা দেখলাম। হাতপাখায় চাপ দিলে গোলাপফুল, লাঙ্গল বা অন্য মার্কা আসতে পারত, তা না হয়ে হাতপাখায় চাপ দিলে নৌকা এল কেন। এতে বোঝা যায়, এটা সাজানো থাকে। আসলে এটা বাটপারি মেশিন। এতে স্মার্ট কারচুপি করেছে, যাতে কেউ ধরতে না পারে।’
ভোটের দিন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না অভিযোগ করে হাতপাখা মার্কার এই প্রার্থী বলেন, ‘১১ তারিখ পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল, ১২ তারিখে এসে তা উল্টে যায়। আইওয়াশ হিসেবে বাইরে খুব তোড়জোড় দেখেছি। আমি একজন প্রার্থী হয়েও কেন্দ্রে ঢুকতে ভীষণ কড়াকড়ি করেছে। সঙ্গে একজনকেও ঢুকতে দিতে চায়নি। ভেতরে ঢুকে দেখি, নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে অনেকে ঘুরছে। ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং শহরে বাইরের মানুষ ৫০-৬০ জন দলবদ্ধ হয়ে মহড়া দিয়েছে। বেলা সাড়ে তিনটায় বয়রা এলাকায় একদল বিজয় মিছিল করছিল। অথচ আশপাশের পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় ছিল। আইওয়াশ হিসেবে প্রচুরসংখ্যক পুলিশ–বিজিবি চারদিকে রেখেছে। অথচ আমরা লক্ষ করেছি, তাদের অ্যাকটিভিটিস খুব দুর্বল ছিল। তাদের কোনো সরব ভূমিকা আমরা দেখতে পাইনি।’
নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে আবদুল আউয়াল বলেন, ‘অথর্ব ইসির পদত্যাগ দাবি করছি। এই ইসি যোগ্য নয়। তারা সরকারের পা চাটা গোলাম। সিইসি খুলনা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে যা বলেছিলেন, হয়েছে তার উল্টোটা। তিনি বলেছিলেন, কেন্দ্র থেকে ফলাফলের স্বাক্ষরিত প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে। আমরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে ঝগড়া করেও অনেক কেন্দ্র থেকে সেটা নিতে পারিনি। অনেক কেন্দ্র থেকে আমাদের হাতে লিখে নিতে বলা হয়েছে।